ঢাকা, বুধবার   ০১ মে ২০২৪

খালেদা জিয়া কারাগারে বিশ্রামে আছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল   

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:০১, ৮ মে ২০১৮

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, খালেদা জিয়ার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছে, তাই তিনি চলাফেরা করতে পারছেন না। তার মেডিকেল রিপোর্টে এ ধরনের কথা বলা হয়েছে। তাহলে উনার বাহিরে হাঁটার দরকার কি? ওনার বিশ্রাম প্রয়োজন। ওনিতো কারাগারে এখন বিশ্রামেই আছেন। বরং আমরা আপিল শুনানি শেষ করি।

মঙ্গলবার (৮ মে) দুপুর সোয়া ১টার দিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চে শুনানিকালে মাহবুবে আলম এসব কথা বলেন।

দুপুর পৌনে ১২টার সময় রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি শুরু করেন। শুরুতে তিনি এ মামলার বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজার নথিগুলো আদালতে উপস্থাপন করেন। এরপর তিনি বলেন, ‘বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিলের পেপারবুক এরই মধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। আমরা চাইলে এ মামলার আপিলের শুনানি শুরু করতে পারি। মূল আসামি যেহেতু খালাস পাননি। এ মুহূর্তে তাঁকে জামিন দেওয়া যায় না। তাই আপিল নিষ্পত্তি করা হোক।’ এ সময় তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন হায়কে ২৪ বছরের কারাদণ্ড এবং ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভাকে ১২ বছরের সাজা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন, তাঁদেরও জামিন দেওয়া হয়নি।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘মাই লর্ড, মেডিকেল রিপোর্টে বলা হয়, খালেদা জিয়ার পায়ের হাটুঁতে ব্যথা। তিনি হাঁটতে পারেন না। উনার ঘাড়ে ব্যথা। উনার উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। এত কষ্ট করে হাঁটার দরকার কী? উনি তো কারাগারে রেস্টেই আছেন।’

এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলে ওঠেন, ‘উনার এসব কথা বলার দরকার কী? উনি রাষ্ট্রের একজন প্রধান আইন কর্মকর্তা। উনি কি এসব বলতে পারেন?’এ সময় আদালতে হৈচৈ শুরু হয়ে যায়। পেছন থেকে আইনজীবীরা ‘শেইম, শেইম’বলা শুরু করেন।

এ পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘উনাকে বলতে দিন।’এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল আবার বলা শুরু করেন। এ সময় তিনি এ মামলার সাজার বিভিন্ন নথি পড়া শুরু করেন। একপর্যায়ে বলেন, ‘কারাগারের ডাক্তার উনাকে চেকআপ করলেন। পরে নাপা ওষুধ সেবনের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু উনার ব্যক্তিগত ডাক্তররা দেখা করলেন, আবার বাইরে এসে সংবাদ সম্মেলন করেন। এটা কীভাবে সম্ভব। তারা তো ডাক্তার, ট্রিটমেন্ট করবে। সংবাদ সম্মেলন করতে পারে না। উনারা পরামর্শ দিলেন ইউনাইটেড হাসাপাতালে ভর্তির জন্য। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ উনাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করিয়েছেন। তাই করাগারে উনার সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেননা, উনার সঙ্গে একজন সেবিকাও দেওয়া হয়েছে।’

এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘এটি দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তিনি এগুলো বলতে পারেন না। এমন একটি মামলায় তিনি দাঁড়াতে পারেন না। তখন আইনজীবীরা চিৎকার করে বলতে থাকেন ইয়েস! ইয়েস!’

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘তাঁকে সাবমিট রাখতে দিন।’ এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল আবার মামলার নথি পড়া শুরু করেন। এ সময় খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এখন তো জামিনের শুনানি চলছে। আপিলের না। এ সময় আইনজীবীরা হৈচৈ শুরু করলে বিচারকক্ষের পরিবেশ কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।’

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘হোক না। শেষ হয়ে গেছে! শেষ করতে দিন। আমরা এভাবে শুনতে পারব না।’ একপর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এ মামলায় আপিলের নথি প্রস্তুত। আমরা চাইলে আগামীকাল থেকে শুনানি শুরু করতে পারি।’

এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী শুনানি শুরু করেন। তিনি এ সময় অ্যাটর্নিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। তাঁদের আইনজীবী রয়েছে। আপনি এখানে শুনানি করতে পারেন না। আপনি কি রাষ্ট্রের নাকি দুদকের আইনজীবী?’ এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এবং এ জে মোহাম্মদ আলীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এ পর্যায়ে আদালত উভয়পক্ষকে শান্ত করেন। এর আগে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে দুদকের আইনজীবী শুনানি শুরু করেন।

এসি  

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি